হ্যাকিং এর নাড়িভুঁড়ি ( কি,কেন,কিভাবে ? ) জানুন …

গত কয়েক দিন যাবৎ YouTube Chaneel হ্যাকিং নিয়ে বিভিন্ন ধরণের পোষ্ট পাচ্ছি গ্রুপে। শুরু করার আগে বলে নেয় ২০১২ সালে আমার অনলাইন ক্যারিয়ার শুরু করি এবং তখন শুরু করি হ্যাকিং দিয়ে।

লেখক : Bulbul Ahmed Mollik

প্রাথমিক ট্রেনিং শেষ করার পরে যখন মাঠে নামি হাতে কলমে হ্যাকিং শুরু করার জন্য তখন যে রেজাল্ট পেয়েছিলাম তাতে আমি নিজে ও হতবাক হয়ে যায় এবং বিবেকের তাড়নায় তখন হ্যাকিং ছেড়ে দেয়।

কিন্তু গত বছর শেষের দিতে পুরাতন বিদ্যা আবার ও ঝালিয়ে নেবার চেষ্টা করি তাই নতুন এডভ্যান্স একটা কোর্স করি এবং কিছুদিন যাব সেটার বাস্তব প্রয়োগ ও করেছি তবে সেটা শুধুমাত্র নিজেকে হ্যাকিং থেকে রেহায় পাবার জন্য কিন্তু একটা কথা বলে রাখি আপনি যত চেষ্টায় করেন যত বড় বড় এন্টি হ্যাকিং বা এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করেন না কেন আপনি কখন ও বাঁচতে পারবেন না কারণ একজন হ্যাকার যদি চায় আপনার ক্ষতি করতে তাহলে সে আদা জল খেয়ে আপনার পিছনে লাগবে।

প্রথম ধাপ শুরু হবে তথ্য সংগ্রহ দিয়ে। যেটাকে সোসাল স্পুফিং বলে। গুগল যেভাবে তার রোবট ছড়িয়ে রেখেছে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ইন্টারনেটে ঠিক আপনার বিরুদ্ধে রোবট ছেড়ে দেওয়া হবে যেটা শুধু মাত্র আপনার তথ্য সংগ্রহ করবে।

উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি – আপনি কি খেতে পছন্দ করেন, কোথায় ঘুরতে ভালবাসেন, আপনার সোসাল মিডিয়া একাউন্ট কয় টা, কোন একাউন্টে আপনি বেশী সক্রিয় থাকেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

সব তথ্য এক জায়গাতে করার পরে বলা চলে আপনার থেকে আপনার বিষয়ে একজন হ্যাকার বেশী জানে।

দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে আপনার সাথে যোগাযোগের মাধ্যামে। কারণ আপনার তথ্য অনুসারে আপনাকে এমন সব জিনিস দেখতে বা শুনতে বাধ্য করা হবে যে আপনি নিজে ও বুজতে পারবেন না যে আপনাকে ঐ সব জিনিস দেখতে বাধ্য করা হচ্ছে। আপনি ঐ সব জিনিস দেখবেন তো অবশ্য ই সাথে সেই গুলোতে লাইক কমেন্ট আর শেয়ার করতে বাধ্য হবেন।

আর ঠিক এর মাঝে আপনাকে এমন কিছু লিংঙ্ক আর সফট্যায়ার আপনাকে উপহার দেওয়া হবে বা আপনার সামনে উপস্থাপন করা হবে যেটা আপনি খুশি মনে আপনার পিসিতে ইনস্টাল করবেন বা লিংঙ্ক এ ক্লিক করে আপনার আইপি তাকে দিয়ে দিবেন।

তৃতীয় ধাপ শুরু হবে কিছুদিন পরে, সময় টা হতে পারে ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৭ দিন, কারণ একজন হ্যাকার আপনার সিপিতে বা ব্রাউজারে এড হবার পরে আপনার গতিবিধিতে নজর রাখে তারপর শুরু করে আপনার একাউন্ট গুলোর দখল নেওয়া আর এই দখল যে তখন ই নেয় যখন আপনি অনলাইনে এক্টিভ কম থাকেন উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যখন আপনি ঘুমে থাকেন বা কোন কাজে ব্যস্ত থাকেন যেটা অফলাইন কাজ।

আপনার একাউন্ট হাতিয়ে নিবার পরে কাজ হয় তার অপব্যবহার করা। হতে পারে সেটা আপনার একাউন্ট থেকে সমাজ বা রাষ্ট্র বিরোধী কোন পোষ্ট করা কিংবা ব্যক্তিগত গোপন তথ্য ফাস করে দেওয়া বা ফাস করে দেবার হুমকি দেওয়া। ব্যাংক থেকে বা কার্ড থেকে অর্থ তুলে নেওয়া (যেটা আমার সাথে ঘটেছে)

এখন প্রশ্ন হল কেন হ্যাকিং করে বা হ্যাকিং করে লাভ টা কি?
এই প্রশ্নের অনেক গুলো উত্তর হতে পারেঃ –

১. প্রথম লাভ হল এর মাধ্যমে অর্থ প্রাপ্তি হয় যা অনেকে ই আয়ের উৎস হিসাবে দেখে। আর এটা আবার দুই ধরণের হতে পারে যেমন, সঠিক উপায়ে উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ফেসবুকের প্রতিষ্টাতা মার্ক জাকারবার্গ এই ব্যক্তি এমন একজন হ্যাকার যেখানে তার কাছে সবাই স্বেচ্ছায় তার তথ্য জমা রাখে এবং এই তথ্য তিনি বিক্রি করেন অর্থের বিনিময়ে এটা ভালো বুজবে যারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকেন। আবার অনেক সময় অনেক কোম্পানি হ্যাকার ভাড়া করেন যারা তাদের সাইট বা তাদের সফট্যার হ্যাক করার জন্য এবং তার বিনিময়ে তাদের কে টাকা দিয়ে থাকে। আর এই সব হ্যাকারদের বলা হয় White Hat Hacker.

২. দ্বিতীয় লাভ হল টাকা আর মজা এখানে একজন হ্যাকার আপনার তথ্য চুরি করবে এবং সেই তথ্য দেখে মজা করবে এবং সেই সাথে আপনার থেকে টাকা ও নিতে এবং পরে আপনাকে সাবধান ও করে দিবে যে এই এই কাজ গুলো কর না। তবে এরা আপনার তথ্য অনলাইনে ছড়িয়ে দেয় না আবার দেয়। দেয় না আবার দেয় বলার কারণ হল এরা যদি আপনার থেকে যদি টাকা না পায় তাহলে আপনার পরিচয় অনলাইনে ছড়িয়ে দিবার ফলে আপনার সামাজিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলে দেয়। আর এই সব হ্যাকারদের বলা হয় Grey Hat Hacker

৩. তৃতীয় লাভ হল দ্বিতীয় লাভের মতন কিন্তু এখানে হ্যাকার আপনার থেকে টাকা বা অর্থ নেবার পরে আপনার তথ্য আপনাকে ফেরৎ দিবে না এবং সেই তথ্য নষ্ট করে ফেলবে কিংবা সেটা অনলাইনে ছড়িয়ে দিবে।

এত ফিরিস্তির পরে এবার আশা করি বুজতে পারছেন আপনি কোন হ্যাকারের হাতে পড়েছেন বা পড়বেন।

এবার বলি আমরা (বাংলাদেশীরা বা ভারতীয় উপমহাদেশে যারা বাস করি) কেন হ্যাকিং এর শিকার বেশী হয়।

এই হ্য্যাকিং এর প্রধান এবং অন্যতম কারন হল আমার শিক্ষা। আপনি কি আপনার বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন আপনি কম্পিউটার কেনার পরে জেনুইন Windows ব্যবহার করেছেন কিনা? অনেক ই বলতে পারেন যে হ্যাঁ আমি করেছি। এবার আমার প্রশ্ন আপনি কি Windows কিনে ব্যবহার করেছেন নাকি অনলাইনে সার্চ দিয়ে খুজে ব্যবহার করেছেস জেনুইন Windows তারপর সেটা ইনস্টাল করেছেন আপনার কম্পিউটারে?

এটা যদি করে থাকে তাহলে আমি ১০০% শিওর বলতে পারি আপনি যে Windows OS জেনুইন হিসাবে ব্যবহার করছেন তা ১০০% জেনুইন না। এখন কথা হল আপনার সন্তানের মায়ের চরিত্র যদি ভালো না হয় তাহলে বাচ্চা কিভাবে নেককার হবে!!!

এবার আসি IDM নিয়ে যারা অনলাইনে আছেন এবং নিয়মিত অনলাইন থেকে ভিডিও অডিও ফাইল ডাউনলোড করেন তারা অব্যশই আপনার পিসি বা ল্যাটপটে IDM ব্যবহার করেন। কিন্তু আপনি কি কোনদিন জানার চেষ্টা করেছেন যে IDM এর দাম কত? যখন ই IDM এর নাম শুনেছেন আর যখন শুনেছেন এটা একটা পেইড সফট্যায়ার তখন ই গুগলে সার্চ করেছেন IDM Crack অথবা How to find IDM crack

এবার আসি Photoshop নিয়ে হাসি আচ্ছে লিখতে যেয়ে, আজ পর্যন্ত মনে হয় Adobe এর মহান আবিষ্কার কেউ কেনার চেষ্টা করিনি হাজারে ১ জন পাওয়া যাবে কিনা জানি না। অথচ হাজারে ১০ টা কম্পিউটার পাওয়া যাবে না যে কম্পিউটারে Photoshop ইনস্টাল করা নেই। তাহলে বাঙ্গালী এখানে ও ক্রাক খুজে এবং এন্টি ভাইরাস অফ করে সেটা ইনস্টাল করে।

কোন কোন সফট্যায়ারের নাম বলব Camtasia, Wondershare, VPN, Microsoft Office, DU Meter নাম ধরলে বলে শেষ করা যাবে না

এতসব ক্রাক সফট্যায়ার ব্যবহার করার পরে ও আপনি চান আপনি হ্যাকিং থেকে নিরাপদ থাকবেন? এটা কি মজা পাইছেন?

হ্যাকিং এর আপডেট কোর্স করতে যেয়ে দেখলাম প্রায় ৩৫ টার মতন সফট্যায়ার আছে যার কোন না কোন ১০ টা সফট্যায়ার যে কোন পিসি বা ল্যাপটপে ইনস্টাল থাকে ই। আর আমি যদি MITM হতে পারি তাহলে আপনি যত পদের এন্টি ভাইরাস আর পেইড সফট্যায়ার ব্যবহার করেন না কেন আপনার পিসি খেয়ে নিব এক আর দুই। সুন্দর করে আপনি একটা আপডেট পাঠাব আপনি বোকা*** মতন সেটা ইনস্টাল করবেন আর আমি আপনার পিসিতে হাজির হয়ে যাব।

এরপর সব ফাইল নিব তা ডিলিট করব তারপর আপনার ব্রাউজারের কুকিজ নিব সব সোসাল মিডিয়ার লগইন নিব তারপর একটা একটা করে মজা দেখাব। কোর্সের একটা পর্যায়ে একটা সফট্যায়ার তৈরী করতে হয় যেখানে একজন হ্যাকার চেষ্টা করে ২২ টা মেজর এন্টি ভাইরাসের সিস্টেম ফাকি দিয়ে একজনের কম্পিউটার দখল করা। আমি মনে করি ১৬ টা এন্টি ভাইরাস ফাকি দিতে পারলে এই উপমহাদেশের প্রায় সব কম্পিউটার দখলে নেওয়া সম্ভব। এর এটা হতে পারে Windows OS বা Apple OS কিংবা Android system. আর আপনার 2 Step Verification কেন 5 Step Verification On থাকলে ও ডোন্ট কেয়ার, সময় লাগবে আপনার পিসির কন্টোল নেবার কিন্তু অসম্ভব না।

এখন সমাধান একটা ই প্রথম কথা হল আপনার তথ্য বা ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে বেশী শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। পেইড সফট্যায়ার ব্যবহার করুন আর অযাথা লিংঙ্ক ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন, কোন সফট্যায়ার আপডেট দেবার সময় চেক করে নিন যে আসলে ই সেই সফট্যায়ারের আপডেট এসেছে কিনা। যদি এই থাকে তাহলে ঐ আপডেট ডাউনলোড করে চেক করে নিবেন কোন লিংঙ্ক থেকে আপডেট এসেছে। এটা কি যে কোম্পানির সফট্যায়ার তাদের সার্ভার থেকে আপডেট এসেছে নাকি তৃতীয় কোন ব্যক্তি পাঠিয়েছে।

এখন এই কথা শুনে আবার আপডেট দেওয়া বন্ধ করে দেবেন না। কারণ সেটা যদি করেন তাহলে পোলিও টিকার বাদ যাবে না কোন শিশুর মতন কোন আপনাকে খুজে বের করা হবে আপনার তথ্য হাকিং কারার জন্য।

সর্বশেষ বলতে চায় মৃত্যু কখন আসবে তার যদি গেরান্টি পেতাম তাহলে Black Hat হ্যাকার হতাম আর মজা দেখাতাম। মৃত্যুর কোন গেরান্টি নেই তাই সব কিছু শিখে ই রেখে দিয়েছি নিজে বাচার জন্য। ২০১২ থেকে ২০২০ এই টানা ৮ বছর যদি চেষ্টা করতাম তাহলে কিছু না কিছু করতে পারতাম হ্যাকিং এ।

যাই হওক অনেক সময় নষ্ট করে এই লেখা টা লিখলাম অনেক দিন পরে আশা করি লাইক করবেন, শেয়ার করবেন এবং প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করবেন ভালো লাগলে উত্তর দিব মেজাজ খারাপ হলে আপনার তথ্য অনলাইনে পাবলিক করে দিব 😉

সবার মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি ফিআমানিল্লাহ্ ।

পোস্ট টি লিখেছেন : Bulbul Ahmed Mollik

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started